সমস্যা হচ্ছে অনেক ই-মেইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানই ১০ মেগাবাইটের চেয়ে বড় আকৃতির ফাইল পাঠানো সমর্থন করে না। তখন পড়তে হয় সমস্যায়। তবে সব সমস্যারই কিছু বিকল্প সমাধান থাকেই। এক্ষেত্রেও আপনি বিকল্প কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করে অনেক বড় আকৃতির ফাইল/ডাটা পাঠাতে পারবেন।
আপনি যদি জিমেইল কিংবা আউটলুক এর ই-মেইল সেবা ব্যবহার করে থাকেন তবে তারা নিজ থেকেই আপনাকে বড় ফাইল পাঠানোর জন্যে বিকল্প পরামর্শ দেবে। কিন্তু আপনি যদি ডেক্সটপ ই-মেইল সার্ভিস বা অন্য কোন সেবা ব্যবহার করেন তবে সেক্ষেত্রে বিকল্প কিছু উপায় সম্পর্কে জানতে হবে।
তাত্ত্বিকভাবে আপনি ই-মেইলে কত বড় ফাইল পাঠাতে পারবেন তার আসলে নির্দিষ্ট কোন সীমারেখা নেই। তবে সর্বোচ্চ ১০ অথবা ২৫ মেগাবাইট ফাইল আকৃতিকে ই-মেইলের স্বাভাবিক আকৃতি ধরা হয়। আর সেজন্যেই অনেক ই-মেইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানই এই স্ট্যান্ডার্ড সাইজ নির্ধারণ করে দেয়। ফলে আপনি চাইলেও ফাইল সংযুক্তির মাধ্যমে ১০ মেগাবাইটের চেয়ে বড় ফাইল তাদের সেবা ব্যবহার করে পাঠাতে পারবেন না।
এক্ষেত্রে জিমেইল যদিও সর্বোচ্চ ২৫ মেগাবাইট পর্যন্ত ফাইল সাইজ সমর্থন করে থাকে তবে সেটা কেবলই জিমেইল থেকে জিমেইল এ ফাইল পাঠানোর ক্ষেত্রে। যদি জিমেইল থেকে অন্য কোন ই-মেইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই আকৃতির ফাইল পাঠানোর চেষ্টা করা হয় তবে তারা তা সমর্থন করতে না-ও পারে। শুধুমাত্র অন্য কোন ই-মেইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেই নয়, বড় আকৃতির ফাইল অনেক সময় সার্ভারেও আটকে যেতে পারে বা প্রত্যাখ্যাত হতে পারে। কেননা একটি ই-মেইলকে পাঠানোর সময় সেটিকে অনেকগুলো মেইল ট্রান্সফার এজেন্টের মধ্য দিয়ে পরিভ্রমণ করতে হয়।
আরেকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে, আপনি যখন কোন ফাইল ই-মেইলে সংযুক্ত করছেন তখন এটির আকৃতি এমআইএমই এনকোডেড ব্যবস্থায় শতকরা ৩৩ ভাগ পর্যন্ত বিবর্ধিত হয়। অর্থাৎ, আপনি যদি ১০ মেগাবাইটের একটি ফাইল সংযুক্ত করেন তবে তা বিবর্ধিত হয়ে ১৩ মেগাবাইট আকার ধারণ করবে।
যাই হোক, এখন আপনি কিভাবে বড় আকারের ফাইল ই-মেইলে পাঠাতে পারবেন সে ব্যাপারে কিছু উপায় বর্ণনা করছি।
১. ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস ব্যবহার করে
বড় আকারের ফাইল পাঠানোর ক্ষেত্রে এটি হচ্ছে সবচাইতে সহজ উপায়। আপনি যেকোনো একটি বিশ্বাসযোগ্য অথবা জনপ্রিয় ক্লাউড স্টোরেজ সেবা যেমনঃ গুগল ড্রাইভ, স্কাইড্রাইভ কিংবা ড্রপবক্স ব্যবহার করে খুব সহজেই বড় আকারের ফাইল পাঠাতে পারেন। এক্ষেত্রে ই-মেইল প্রাপকরা একটি লিঙ্ক গ্রহণ করবেন এবং সেখান থেকে সরাসরি ফাইল নামিয়ে নিতে পারবেন।
আপনি যদি জিমেইল কিংবা আউটলুকের ই-মেইল সেবা ব্যবহার করে থাকেন তবে নিশ্চয়ই দেখে থাকবেন যে তারা গুগল ড্রাইভ এবং স্কাইড্রাইভকে তাদের মেইল সেবার সাথে সংযুক্ত করেছে। সেখান থেকে খুব সহজেই আপনি যে কারো সাথে ই-মেইলের মাধ্যমে ফাইল শেয়ার করতে পারবেন। জিমেইল ও আউটলুক এভাবে ফাইল শেয়ার করার সময় আপনাকে সরাসরি ক্লাউড স্টোরেজে বিদ্যমান ফাইলের কাছে নিয়ে যাবে বা নতুন কোন ফাইল আপলোড করার সুযোগ দেবে।
আপনি যদি ড্রপবক্সের সেবা ব্যবহার করে থাকেন তবে সেখান থেকে কোন ফাইলের ওপর ডান ক্লিক করে লিঙ্ক নির্বাচনের মাধ্যমে সরাসরি ফাইল শেয়ার করতে পারবেন।
২. একাধিক ছোট অংশে বিভক্ত করে
বড় আকারের ফাইল পাঠানোর আরেকটি উপায় হচ্ছে বড় একটি ফাইলকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে ফেলা। ব্যাপারটি অনেকটা এরকম যে, ধরুন আপনি ৫০ মেগাবাইটের একটি ফাইল কারো কাছে পাঠাতে চাইছেন। কিন্তু আপনার ই-মেইল সেবা ১০ মেগাবাইটের বেশি বড় ফাইল সমর্থন করে না। সেখাত্রে আপনি ফাইলটিকে ১০ মেগাবাইটের ৫ টি অংশে ভাগ করে পাঠাতে পারেন। ফাইল বিভক্ত করার জন্যে কোন একটি ফাইল কমপ্রেশন প্রোগ্রাম যেমনঃ 7-Zip ব্যবহার করতে পারেন।
তবে এক্ষেত্রে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে আপনি যদি আলাদা আলাদা মেইলে প্রাপকের কাছে এই বিভক্ত ফাইলগুলো পাঠান কিংবা সে যদি না জানে যে কিভাবে এগুলোকে আবার একত্রিত করতে হবে তাহলে সেক্ষেত্রে সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে দু’পক্ষকেই। তাই এই পদ্ধতি অবলম্বনের আগে প্রাপককে এ সম্বন্ধে জানিয়ে রাখা জরুরি।
৩. বড় ফাইল সমর্থন করে এমন ই-মেইল সেবা ব্যবহার করে
কিছু ই-মেইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান আছে যারা বড় আকারের ফাইল সংযুক্তি সমর্থন করে। এমন কোন সেবা ব্যবহার করেও ইচ্ছে করলে আপনি বড় আকারের ফাইল পাথা তে পারবেন। তারা ব্যবহারকারীকে তাদের সার্ভারে তথ্য জমা করতে বলে এবং সংশ্লিষ্ট লিঙ্ক প্রদান করে। তবে এক্ষেত্রে একটা বিষয় হচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও তেমন জনপ্রিয় নয়। যে কারনে এগুলো যে আসলে নিরাপদ সে ব্যাপারেও সুনিশ্চিতভাবে কিছু বলা যায় না। আর কেউ নিশ্চয়ই নিরাপত্তা সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত না হয়ে কাউকে তার ব্যক্তিগত কিংবা গুরুত্বপূর্ণ বা স্পর্শকাতর তথ্য শেয়ার করতে চাইবেন না।
উপরের উপায়গুলোর মধ্যে বলা যায় যে প্রথমটি তুলনামূলক সহজ ও নিরাপদ। এছাড়া কিছু ই-মেইল সার্ভিস সম্ভাব্য ক্ষতিকর ফাইল যেমন .exe ধরণের ফাইল ব্লক করে দেয়। ফলে প্রথম পদ্ধতি অনুসরণ করে লিঙ্ক শেয়ারিঙের মাধ্যমে সহজেই ফাইল আদান-প্রদান করা যাবে।
Post a Comment